মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭

বাংলা লেখা পড়া সহজ হল



বাংলা লেখা পড়া সহজ হল

অহনলিপি-বাংলা১৪  ফন্ট AhanLipi-Bangla14 font  
ডাউনলোড করে নিজেকে আধুনিক করে তুলুন৤  

অহনলিপি-বাংলা১৪ ফন্ট হল-- 
(১)সেকেন্ড জেনারেশন ফন্ট
(২)স্মার্ট ফন্ট
(৩)বর্ণসমবায় ফন্ট
(৪)আলটিমেন্ট ফন্ট
এবং
(৫)বাংলা ফন্ট টেকনোলজির ফলিত প্রয়োগ৤




লেখাটি অহনলিপি-বাংলা১৪(AhanLipi-Bangla14) ফন্টে পড়তে হবে, নচেৎ লেখাটি দুষ্পাঠ্য হবে৤  


বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক--



গুগুল লিংক https://sites.google.com/site/ahanlipi/  

অথবা   ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড লিংক:



সঙ্গে দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে৤

অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default text font setting)
Default text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং

এবং


অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet setting)

(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)

on internet(Mozilla Firefox)
(top left) Tools  
              Options--contents
              Fonts and Colors
              Default font:=AhanLipi-Bangla14
                        Advanced...
                                    Fonts for: =Bengali
                                    Proportional = Sans Serif,   Size=20
                                    Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Sans Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Monospace=AhanLipi-Bangla14,  Size=20
                                    -- OK
            Languages
            Choose your preferred Language for displaying pages
            Choose
            Languages in order of preference
            Bengali[bn]
            -- OK
 -- OK

          এবারে ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে৤ নেটে এই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে৤






বাংলা লেখা পড়া সহজ হল


                                             মনোজকুমার দ. গিরিশ

          একটি বাঙালি ছেলে ইংরেজি মধ্যমে পড়ে৤ ইংরেজিটা সে চটপট শিখে নিয়েছে, কিন্তু “ওঃ, বাংলাটা কী কঠিন!” বলে তার শংকার শিহরণ বেশ ভাববার বিষয়৤ ইংরেজি তার মাতৃভাষা নয়, তবু তার কাছে ইংরেজিটা সহজ, আর মাতৃভাষা বাংলাটা খুব কঠিন৤ এটাই তার স্বাভাবিক অভিব্যক্তি৤
          কিন্তু বাংলাটা কেন কঠিন? কোথায় তার কাঠিন্য? সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা দরকার৤ বাংলা যাতে ইংরেজির মতো সহজ হয়, সে উদ্যোগ নিতে হবে৤ নয়তো চিরকালই বাংলাভাষী শিশুরা বলবে-- ওঃ, বাংলাটা কী কঠিন! ইংরেজি কিন্তু তার বা তাদের কাছে কঠিন নয়৤

বাংলাভাষাটা কিন্তু আসলে কঠিন নয়, কঠিন তার জটিল লিখন পদ্ধতি৤ সেটা সরল করতে হবে৤ 

          প্রথমে দেখা যাক হরফ বিচার করে৤ ইংরেজিতে হরফ বা বর্ণ ২৬টি, বাংলায় আছে তার ঠিক দ্বিগুণ৤ বাংলা বর্ণমালা মনে রাখা একটু কঠিন বইকী৤ তবে এটা ভয়ে শিহরিত হবার মতো ব্যাপার নয়৤ এতগুলো বর্ণ মনে রাখা একটু কঠিন হলেও তা দুর্ভেদ্য নয়৤ বাংলায় আছে ১১টি স্বরবর্ণ, আর ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ৤ বিদ্যাসাগরের আমলে এটাই ছিল ৫২(১২+৪০)টি, অর্থাৎ ইংরেজির ঠিক দ্বিগুণ৤ 
          তা হলেও তা “ওঃ, বাংলাটা কী কঠিন!” বলার মতো ব্যাপার নয়৤ ব্যাপারটা অন্যত্র৤ তা হল ইংরেজি শব্দ যখন লেখা হয়, তখন সকল বর্ণই পাশাপাশি বসিয়ে লেখা হয়, এর কোনও ব্যতিক্রম নেই৤ আর বাংলা লিখতে বর্ণ পাশাপাশি বসিয়ে অল্প কয়েকটি শব্দ লেখা যায় বটে, কিন্তু তা খুব বেশি নয়৤ যেমন-- অত, অতল, অবতল, অনবরত, দহরমমহরম৤
বাংলায় আছে স্বরচিহ্ন, এবং ব্যঞ্জনচিহ্ন তথা ফলা৤ আর আছে সেগুলির জটিল ব্যবহার৤
          বাংলায় ১১টি স্বরের মোট স্বরচিহ্ন দশটি৤ একটি স্বর তথা ‘অ’-এর কোনও দৃষ্টিগ্রাহ্য চিহ্ন নেই, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই অ-এর অলক্ষ্য স্বরচিহ্ন তথা অ-ধ্বনি সকল বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণেই স্বতঃযুক্ত৤ সে কারণেই বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ সহজে উচ্চারণ করা যায়৤ ইংরেজির মতো প্রতিটি ব্যঞ্জনের পৃথক নাম দিয়ে বর্ণটিকে নির্দেশ করতে হয় না৤ ফলে বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণগুলির উচ্চারণ সহজ হলেও বাংলা বর্ণমালা সেমি এ্যালফাবেটিক, আর ইংরেজি বর্ণমালা পূর্ণ এ্যালফাবেটিক৤
          এসবও তেমন কোনও ব্যাপার নয়, আসল ব্যাপার হল বাংলা শব্দ লিখতে হলে স্বরচিহ্ন সহযোগী বর্ণের (১)পরে[কা], (২)আগে[কে], (৩)নিচে[কু], (৪)দুপাশ জুড়ে[কো] বসে৤ ফলে তা হরফকে ঘিরে এক জটিল সমাবেশ তৈরি করে৤ আবার কিছু স্বরবর্ণ-চিহ্ন হরফকে ঢেকে পিছন ফিরে থাকে[কী], কোনওটা সামনের দিকে ফেরানো থাকে[কি], আরও বিচিত্রভাবেও থাকে-- কৈ, কৌ৤
ক=কা, কি কী, কু, কূ, কৃ, কে, কৈ, কো, কৌ৤ 



ি
কা
কি
কী
কু
কূ
কৃ
কে
কৈ
কো
কৌ

          স্বরবর্ণ এবং তার চিহ্ন যদি আরও বেশি থাকত তবে আরও বিচিত্রভাবে তা হরফকে ঘিরে বসানো হত৤ দশটি চিহ্ন বসানো হচ্ছে মূলত তিনটি দিকে-- সামনে, পিছনে, দুপাশে, নিচে৤   
          এজন্য বাংলা হল কমপ্লেক্স স্ক্রিপ্ট৤ আর শুধু কি এজন্য? না তা নয়, বাংলায় আছে ৮টি ফলা তথা ব্যঞ্জনচিহ্ন[ণ ন ম য রেফ, র-ফলা, ল ব] ৤ সাতটি হরফকে[ণ ন ম য র ল ব]  বিশেষ রূপ দিয়ে অন্য হরফের সঙ্গে যুক্ত করে বসানো হয়৤ এগুলিকে বলে ফলা সংযোগ৤ লাঙলের ফলার মতো এদের একটা নির্দিষ্ট রূপ দেওয়া হয়েছে, সেগুলিকে সহজে বার বার ব্যবহারের সুবিধার জন্য৤ তাই এগুলি ফলা৤ সংযুক্ত বর্ণ বা যুক্তবর্ণ অবশ্য অন্য নানা ব্যঞ্জনে ব্যঞ্জনে মিলেও হয়৤ বস্তুত সেগুলিকেই যুক্তবর্ণ বলা হয়৤ দুটি ব্যঞ্জবর্ণ মিলিয়ে এক-একটি নতুন ধরনের রূপ বানিয়ে তা শব্দ গঠনের কাজে লাগানো হয়৤ এই বর্ণমিলনগুলি প্রায়ই দলাপাকানো মণ্ড ধরণের হয়, ফলে তা লিখতে শেখা বেশ অধ্যাবসায়ের ব্যাপার৤ শিশুরা এসব যুক্তবর্ণ লিখতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে, বিভ্রান্ত হয়৤  বাংলা পড়া বা লেখা যে কঠিন, তার মূল কারণই এই বিপুল যুক্তবর্ণের জাল দিয়ে ভাষাকে ঘিরে রাখা, ভাষাকে স্তিমিত করে রাখা৤ সিংহ অতি বিক্রমশালী জীব কিন্তু তাকে জালে ঘিরে রাখলে তার বিক্রম কোনও কাজে আসে না৤ চিড়িয়াখানায় বাঘ সিংহ হাতি আমরা কত মজা করে দেখি, বনের মধ্যে তার দাপটে তটস্থ!
          বাংলাভাষাকে ঘিরে রেখেছে কিছুটা পরিমাণে স্বরচিহ্নের সুতো, আর প্রধানভাবে বন্দী করে রেখেছে অঢেল যুক্তবর্ণের জাল৤ সে জাল কাটাতে না পারলে বাংলার মুক্তি নেই, বিক্রম অন্তর্হিত৤ বাংলা তো ভারতের শ্রেষ্ঠ ভাষা, ইউরোপের বাইরে প্রথম নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভাষা, চলচ্চিত্রে অস্কার পাওয়া ভাষা৤ এমনকী বাংলা সাংবাদিকতার জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পাওয়া৤
জালে ঘেরা বাংলাভাষার দুর্গতি দূর করতে হলে উদ্যোগও চাই জোরালো৤ নইলে এই অতি মধুর ভাষাটি অন্যের অগোচরে থেকে যাচ্ছে৤ মানুষকে যা আনন্দ, সুখতৃপ্তি দিতে পারে তা রয়ে যাচ্ছে অজানা৤ দেখেছি আমেরিকা থেকে কোলকাতায় লোক এসেছেন বাংলা শিখতে৤ বহুদিন আগে তাঁদের একদিন স্পোকেন বাংলা বা কথ্যবাংলা বলার ক্লাস নেওয়ার সুযোগ হয়েছে৤
          শুধু শিশুরা নয়, যুক্তবর্ণ নিয়ে সমস্যা বড়দেরও, যে শিশু সবে এসব শিখেছে তার তো সমস্যা হবেই৤ প্রশ্ন এই, এরকম যুক্তবর্ণ কয়টি আছে? তার সঠিক উত্তর কোথাও পাওয়া যাবে না৤ তাহলে “ওঃ, বাংলাটা কী কঠিন!” ধরণের বিস্ময়বাক্য কেন উচ্চারিত হবে না৤ আমরা কি এসব সহজ সরল করার উদ্যোগ নিয়েছি? এসব এমনি করে জড়ানো প্যাঁচানো কেন? তার সঠিক জবাব নেই৤ সেযুগে হাতে করে লেখায় এমনি দলা বানানো হরফে লিখতে সুবিধা হত৤ লিখতে কলম কম চালাতে হত, লেখার জায়গা কম লাগত৤ এগুলি যেন অনেকটা ঠিক রাবার স্ট্যাম্পের মতো, ছাপ মারলেই লেখা! 
যুক্তবর্ণ কেন এমনসব অদ্ভুত আকৃতি নিয়েছে৤ কীভাবে তা হল তার একটু আভাস পেতে চেষ্টা করা যাক-- 


বলে রাখা ভালো যে, এই যে বিবর্তন দেখানো হল, তা সবটাই আনুমানিক৤
         
          এককালে যেমন ব্রাহ্মীলিপিতে ‘ক’ লেখা হত, অনেকটা যোগ চিহ্নের মতো + তার ফলে পাথরের গায়ে তা সহজে খোদাই করা যেত৤ পরে লেখার উপকরণ ও মাধ্যম যত পালটাতে লাগল ‘ক’ বর্ণটির রূপ ততোই পালটে যেতে লাগল৤ নরম উপকরণের উপরে(গাছের পাতা, গাছের বাকল, ভূর্জপত্র, পশুর চামড়া) কালি, রং, খাগের কলম, কীলক দিয়ে লিখতে গিয়ে কালির আঁচড় যুড়ে গিয়ে বর্ণটি ক্রমেই পালটে গেল, তার

তখনও কাগজ আবিষ্কৃত হয়নি৤  

          প্রায় ৫০ বছর ধরে(১৯৬৭-২০১৭) এসব নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়ে অনেক বিষয় চোখে পড়েছে৤ তার জবাব খুঁজতে চেষ্টা করেছি৤ মানুষ সেসব পছন্দ করবেন কিনা জানিনা, তবে সেগুলি নিয়ে কিছু কথা তো বলা যায়৤ বিচার হবে ফল দেখে৤
বাংলায় বিশুদ্ধ যুক্তবর্ণ হয় দুই বর্ণের(২১১), তিন বর্ণের(১৬৮) এবং চার বর্ণের(১৬)৤ সর্বমোট ২১১+১৬৮+১৬= ৩৯৫(তিনশত পঁচানব্বই)৤ চার বর্ণের বেশি বর্ণ মিলে যুক্তবর্ণ বাংলায় নেই৤ অন্য ভাষায় অবশ্য আছে৤ তবে বাংলায় চার বর্ণের মিলন কার্যত তিনবর্ণেরই হেরফের৤ এজন্য বাংলা যুক্তবর্ণ গঠনের দুটি সূত্র(formula) তৈরি করা হয়েছে৤ সেই নির্দিষ্ট সূত্র ধরে বাংলা সকল যুক্তবর্ণ গঠন করা তো যাবেই, গঠন করা যাবে সমাগত, অনাগত, অপরিমেয় যুক্তবর্ণ৤ সেজন্য বাংলা ইউনিকোড ফন্ট(কম্পিউটারে লেখার হরফসমূহ) যেটি আমি তৈরি করেছি তাতে বাংলা সকল যুক্তবর্ণ গঠন করা যাবে৤ বাংলা ইউনিকোড ফন্ট যা এখন অবধি তৈরি করা হয়েছে, তা প্রথম প্রজন্ম৤ আমার তৈরি করা ফন্টটি দ্বিতীয় প্রজন্মের৤ সরল, স্বচ্ছ এবং অগ্রগত৤ (১)সেকেন্ড জেনারেশন ফন্ট, (২)স্মার্ট ফন্ট, (৩)বর্ণসমবায় ফন্ট, (৪)আলটিমেন্ট ফন্ট, এবং (৫)বাংলা ফন্ট টেকনোলজির ফলিত প্রয়োগ



পূর্ণস্বচ্ছ যুক্তবর্ণে বাংলা লেখার জন্যই এই ফন্টটি তৈরি করা হয়েছে৤ ফলে বাংলা লেখা এবং বাংলা পড়া অতি সহজ হয়ে গেছে৤ প্রকৃতপক্ষে হরফ পরিচয় হলেই এখন বাংলা পড়া যাবে, বাংলা লেখা যাবে৤ বিভিন্ন হরফ সংযুক্ত করে দলা পাকিয়ে মণ্ডহরফ বানিয়ে যে রহস্যের আবরণ বাংলা লেখা এবং পড়ায় রয়েছে তা দূর হয়েছে বলে বাংলা লিখতে আর কোনও অসুবিধে নেই, পড়তেও কোনও অসুবিধে নেই৤ বিশেষ করে কম্পিউটারে বাংলা লেখা এখন অনায়াস৤ নেটে সে ফন্টটি দেওয়া আছে, যেকেউ তা ডাউনলোড করে নিতে পারেন৤ অহনলিপি-বাংলা১৪  ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড লিংক:


https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip

          কেমন হয়েছে সে ফন্ট? বাংলা শিক্ষার্থীদের প্রথমে শিখতে হবে (১)বাংলা বর্ণমালা, (২)১০টি স্বরচিহ্ন, (৩)আর সবচেয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার তা হল-- যুক্তবর্ণের জন্য প্রায় কিছুই আলাদা করে শেখার দরকার নেই৤ শুধু য-ফলা, র-ফলা, এবং রেফ এই তিনটি রূপের ব্যবহার শিখতে হবে৤ সেটা শেখা তেমন কঠিন হবে না৤  আর ওদিকে বাংলা সকল যুক্তবর্ণ সরল হয়েছে৤ যা লেখার জন্য, শেখার জন্য প্রচলিত বাংলা বর্ণমালার বাইরের অন্য আর কোনও অচেনা নতুন রূপ কিছু শিখতে হবে না৤
          বাংলার প্রায় চারশত(৩৯৫) যুক্তবর্ণের ভয়াল রূপ রহিত হয়েছে৤ যুক্তবর্ণে সংযোজিত সকল বর্ণই অক্ষত, অবিকৃত থাকবে৤ যুক্তবর্ণের প্রথম বর্ণটি কেবল আয়তনে ছোটো হবে, অন্য আর কিছু নয়৤
          কিছু উদাহরণ দেখা যাক--  শক্ত, যুগ্ম, বাঙ্ময়, উচ্চ, আচ্ছা, লজ্জা, কুজ্ঝটিকা, সঞ্জয়, পট্ট, আড্ডা, বিষণ্ণ, উত্তম, খদ্দর, অন্ন, সাব্বাশ, সম্মান, উল্লাস, উষ্ণ(ষ৏ ), আহ্নিক৤
ফলা বা ব্যঞ্জনচিহ্ন তিনটির উদাহরণ--  পত্র[র-ফলা], তর্ক[রেফ], বাক্য[য-ফলা]৤
          বাংলায় মণ্ডহরফ হিসেবে শিখতে হবে শুধু--  ক্ষ, জ্ঞ এই দুটি৤ এদুটিকেও স্বচ্ছ করা যায়, কিন্তু স্বচ্ছ করলে এর বাংলা উচ্চারণ বিকৃত হয়ে যাবে৤ ক্ষ=ক্‍ষ, জ্ঞ=জ্‍ঞ৤  
         
          যুক্তবর্ণ তিনরকম-- বর্ণ সমাবেশ, বর্ণ সমবায়, মণ্ডহরফ৤ ইংরেজিতে বর্ণসমাবেশ রীতি, এই ফন্টটিতে বর্ণসমবায় রীতি, এবং প্রচলিত ব্যবস্থা হল মণ্ডহরফ রীতি৤ ইংরেজি--  stop, school, club, বাংলা(বর্ণ সমবায়-- স্বচ্ছযুক্তবর্ণ রীতিতে) -- স্টপ, স্কুল, ক্লাব৤


এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে বাংলা লেখাপড়া অনেক সহজ হয়ে গেছে৤ প্রথম দিকে এভাবে লেখা দেখলে একটু অস্বস্তিকর মনে হবে, কিন্তু লেখাপড়াটা একটা অভ্যাসের ব্যাপার৤ আমরা বিকৃত হরফমণ্ড
[ষ্‌+ণ=ষ্ণ=ষ৏ ] লিখতে, পড়তে, দেখতে অভ্যস্ত বলে তা-ই আমাদের কাছে শ্রেয় মনে হয়৤ এব্যাপারে একটি প্রাসঙ্গিক সাইট দেখা যেতে পারে-- 

বাংলা লেখা ছাপিয়ে গেল ইংরেজিকে

 http://banglamoy.blogspot.in/2014/10/blog-post.html 


          রবীন্দ্রনাথের কিছু উক্তি এখানে তুলে ধরা দরকার৤ তিনি প্রণম্য৤

          বাংলা বানান এবং লেখা নিয়ে এত যে মতান্তর তার মূল কারণটি রবীন্দ্রনাথ স্পষ্ট করেই বলেছেন__ “একবার যেটা অভ্যাস হইয়া যায় সেটাতে আর নাড়া দিতে ইচ্ছা হয় না৤ কেননা স্বভাবের চেয়ে অভ্যাসের জোর বেশি৤...অভ্যাসের সঙ্গে সঙ্গে একটা অহংকারের যোগ আছে৤ যেটা বরাবর করিয়া আসিয়াছি সেটার যে অন্যথা হইতে পারে এমন কথা শুনিলে রাগ হয়৤ মতের অনৈক্যে রাগারাগি হইবার প্রধান কারণই এই অহংকার৤... যাঁরা ইংরাজি শিখিয়া মানুষ হইয়াছেন, তাঁরা বাংলা শিখিয়া মানুষ হইবার প্রস্তাব শুনিলেই যে উদ্ধত হইয়া ওঠেন, মূলে তার অহংকার৤”

... বঙ্গ ভাষা রাজভাষা নহে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা নহে, সম্মানলাভের ভাষা নহে, অর্থোপার্জনের ভাষা নহে, কেবলমাত্র মাতৃভাষা৤ যাঁদের হৃদয়ে ইহার প্রতি একান্ত অনুরাগ ও অটল ভরসা আছে তাঁহাদেরই ভাষা৤

     আমার বেশ মনে আছে অনেকদিন পূর্বে একজন বিশেষ বুদ্ধিমান শিক্ষিত ব্যক্তি আমাকে বলিয়াছিলেন, ‘বাংলা সাহিত্য যতই উন্নতিলাভ করিতেছে ততোই তাহা আমাদের জাতীয় মিলনের পক্ষে অন্তরায় হইয়া উঠিতেছে৤ কারণ এ সাহিত্য যদি শ্রেষ্ঠতা লাভ করে তবে ইহা মরিতে চাহিবে না__ এবং ইহাকে অবলম্বন করিয়া শেষ পর্যন্ত বাংলাভাষা মাটি কামড়াইয়া পড়িয়া থাকিবে৤ এমন অবস্থায় ভারতবর্ষে ভাষার ঐক্যসাধনেরপক্ষে সর্বাপেক্ষা বাধা দিবে বাংলা ভাষা৤ অতএব বাংলা সাহিত্যের উন্নতি ভারতবর্ষের পক্ষে মঙ্গলকর নহে৤’
          আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে, আমরা যেমন মাতৃক্রোড়ে জন্মেছি তেমনি মাতৃভাষার ক্রোড়ে আমাদের জন্ম, এই উভয় জননীই আমাদের পক্ষে সজীব ও অপরিহার্য৤

          বাংলা লেখাপড়াকে আর কোনও প্রকার অবগুণ্ঠনের আড়ালে রাখা হবে না৤ স্পষ্ট, এবং সরাসরি লেখা হবে৤ ইংরেজি এত কদর তার সরল হরফের জন্য৤ বাংলায় সেই সারল্য যতটা আনা যায় ততোই ভালো৤ সে প্রয়াস মাতৃভাষার জন্য তো করতেই হবে৤
          আগে দরকার সংস্কারমুক্ত হওয়া, তার পরে আর কোনও সমস্যা নেই৤ সমস্যা থাকবে না৤


-- ০০  --








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন